মোঃ বাবুল হোসেন,ডেমরা
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি-ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৭ নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় কাউন্সিলর হাজী মো. ইবরাহীমসহ অনেক নিরপরাধদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ছাত্র-জনতা।
শুক্রবার বাদ জুম্মা পৃথকভাবে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত গণ সমাবেশে ও ডেমরার ৬৭ নং ওয়ার্ডে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এসব কর্মসূচী পালন করা হয়। বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে তারা এ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছেন বলে জানিয়েছেন।
মামলার এজাহারে দেখা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় ৬৩ নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আবু বক্কর বাদী হয়ে কাউন্সিলর ইবরাহীমসহ অনেক নিরপরাধ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলাটি করেন। এছাড়াও যাত্রাবাড়ী থানায় আরও কয়েকটি মামলা একই ভাবে ব্যক্তি-রাজনৈতিক আক্রোশসহ অবৈধ উদ্দেশ্য সাধন ও মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করার জন্য করা হয়েছে বলেন জানান ছাত্র-জনতা। এ সময় যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাইনুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বিক্ষুব্ধরা বলেন, যে কেউ মামলা করতে আসলেই যাচাই বা বাছাইবিহীন তালিকাসহ মামলা নেওয়া ফ্যাসিবাদী চরিত্রেরই বহি:প্রকাশ। স্বৈরাচার পতন হলেও পুলিশ বাহিনীর মধ্য থেকে এখনো স্বৈরাচারী আচরণের পরিবর্তন হয়নি। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাইনুল ইসলাম হয়তো ৫ আগস্টে যাত্রাবাড়ী থানার পরিস্থিতি ভুলে গিয়েছেন। নয়তো সাধারণ ও নিরীহ মানুষকে আসামি করে দেয়া মামলা তিনি কখনোই গ্রহণ করতেন না। বিএনপি নেতাদের সাথে যোগসাজসে করা মিথ্যা মামলার পেছনে দূরভিসন্ধি রয়েছে কিনা তা ছাত্র-জনতা যাচাই করে দেখবে।
যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম শায়েখে চরমোনাই বলেন, একদল পতিত গোষ্ঠী আবারও চাঁদাবাজি, মামলাবাজি ও দখলদারির রাজনীতিতে ফিরে আসার অপচেষ্টা করছে। নব্য স্বৈরাচার রূপে ফিরে আসা এই অপশক্তিকে ছাত্র—জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবারো রুখে দিবে। এ সময় তিনি বিএনপি’র প্রতি পয়েন্ট নৈরাজ্যবাদী নেতা কর্তৃক যাত্রাবাড়ী থানায় হাজী ইবরাহীমসহ নির্দোশ ভ্যক্তিদের নামে মিথ্যা মামলার তীব্র প্রতিবাদ জানান। এছাড়াও অনতিবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার না করলে কঠোর গণ আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। উপস্থিত ছাত্র জনতা বক্তব্যে বলেন, কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইবরাহীম বিগত ১৭ বছর বিরোধী দলীয় রাজনীতি করেও জনপ্রিয়তার কারণে দুই বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সর্বদা অন্যায়ের প্রতিবাদে সরব ছিলেন। পাশে ছিলেন—আছেন সাধারণ মানুষের সুখে দু:খে। এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন তিনি সাইনবোর্ড থেকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং সম্মুখ যোদ্ধার ভূমিকা পালন করেছেন। আর এই অঞ্চলের ছাত্র জনতাকে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে অব্যাহত লড়াই চালিয়ে যেতে সাহস যুগিয়েছেন। এদিকে বিগত সময়ে কাউন্সিলর ইবরাহীম কখনোই চাঁদাবাজ, লুটতরাজ ও দুর্বৃত্তদের ঠাঁই দেন নাই। তাই আগামী দিনে যারা ডেমরা যাত্রাবাড়ী অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের স্বপ্ন দেখছে তারাই ইবরাহীমসহ ভাল পথে থাকা অনেক নির্দোশ ব্যক্তিকে মামলা দিয়ে দুর্বল করে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। ছাত্র জনতা এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করবে। অনতিবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহার না করলে ডেমরা যাত্রাবাড়ীতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন ছাত্ররা। তারা আরো বলেন, আমরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে টেনে হিচড়ে নামিয়েছি। প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা যদি আবারো স্বৈরাচারী আচরণ শুরু করে তাহলে তাকেও আমরা টেনে হিঁচড়ে নামাতে দ্বিধা করবো না। দেশের আইন ও শৃঙ্খলা সমুন্নত রাতে আমরা কাজ করে যাব। কিন্তু কেউ যদি শান্তির শৃঙ্খলা নষ্ট করতে চায় তাহলে ডেমরা—যাত্রাবাড়ীর সাধারণ জনতা ঐক্যবদ্ধ গণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদেরকে প্রতিহত করবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও কোন মাধ্যম যোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থী শেখ মো. মাহবুবুর রহমান, দুনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ইউসুফ পিয়াস, সংগঠক তরিকুল ইসলাম, ডেমরা কলেজ এর শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম, সম্রাট হোসেন, শামীম, তাওফিক ইসলাম রিপনসহ ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।