
বাবা দিবসে বাবাকে নিয়ে কিছু খন্ড খন্ড স্মৃতিঃ
ক) আমার আব্বা ইসলামের ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন। এই বিষয় সাধারণত কেউ প্রাইভেট পড়তে চায়না যেমনটি চাহিদা আছে গনিত পদার্থ রসায়ন ইংরেজি ইত্যাদির ক্ষেত্রে। এত দুর্বল সাব্জেক্টের শিক্ষক হয়েও আব্বার পেট বড়, অনেক কলিগ আব্বাকে এই বিষয়ে ঠাট্টা করলে বলতেন” ভাই, পানি খেয়ে পেট বড় করেছি, সমাজে চলতে হবেতো !”
খ) আব্বা ক্যরিয়ারের ১৬ বছর কাটিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজে ও সরকারি মহিলা কলেজ থেকে যেখানে বাঘা নেতা শামীম ওসমানের রাজনৈতিক উত্থান শুরু।তখন শামিম ভাই ভিপি ছিলেন । শামীম ভাই আব্বাকে অনেক সম্মান করতেন আর তার ছোট ছেলে (মহিউদ্দিন) হিসেবে তাকে অনেক স্নেহ করতেন। আব্বা কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এমনকি পরীক্ষার সময় ও সাথে নিয়ে যেতেন।আমরা ৪ ভাই ১ বোন।বর্তমানে বড় ছেলে আজমল হোসেন থানা শিক্ষা অফিসার স্ত্রী কামরুন্নাহার গৃহিণী ২. নাজমুল হাসান সাংবাদিক The New Nation স্ত্রী রেবেকা সুলতানা সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার। ৩.কামরুল হাসান ম্যানেজার Trust Bank স্ত্রী জোহুরা খাতুন উপসচিব গণপূর্ত মন্ত্রনালয় ৪.মহিউদ্দিন আহমেদ ম্যানেজার NRBC Bank স্ত্রী Sayra Moni বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা IEDCR ৫.বোন শাহেনা বেগম (Studied from Dhaka University) স্বামী ড.আনোয়ার হোসেন যুগ্ম সচিব ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়। আব্বা নকল ধরতে অনেক ওস্তাদ এবং সাহসী ছিলেন। সাহসী বলছি কারন আব্বার কাছে কোন রাজনৈতিক পরিচয় কাজ করতো না।তাই দুষ্ট ছাত্ররা দোয়া করতো আব্বা যেন পরীক্ষার হলে না পড়েন।
গ) আব্বা খাতা দেখার সময় আগে প্রথমেই খাতায় নাম্বার তুলতেন না, খসড়া খাতায় নাম্বার দিয়ে যোগ করে দেখতেন ছাত্রের অল্প নাম্বারের জন্য ফেল করে কিনা বা লেটার ছুটে যায়কিনা, সেই রকম হলে নাম্বার এডজাস্ট করতেন।
ঘ) আব্বার নাম্বার যোগ করে দেয়া বা টেবুলেশনের কাজে আমি অনেক সহযোগিতা করতাম, বিনিময়ে মাছ বা ভালো কিছু বাজার কিনে এনে বলতো তোর জন্য আনলাম। কাজ করেছি আমি খাবে বাসার সকলে আমার জন্য আলাদা করে কিছু আনলো না এই নিয়ে অনেক কেচাল করতাম।
ঙ) আব্বা চাকুরির শেষ ৫ বছর ছিলেন ব্রাম্মনবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে। আব্বা বলত “বুড়া বয়সেই সরকার মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল বানায়”. সরকার সব বুঝেই সিদ্ধান্ত নেয়।
আব্বা আজ ৭৪ বছরে দাড়িয়ে আল্লাহর অশেষ কৃপায়। আল্লাহ আব্বাকে আরো ৭৪ বছর সুস্থ ভাবে বাচিয়ে রাখুন আমিন। উলেখ্য বাবাকে আমি বা আমরা (ভাই বোনেরা) সরাসরি আব্বা বা বাবা বলে ডাকতে পারিনা। অভ্যাস নাই।
এক পন্ডিত(!) প্রতিবেশি মহিলা বলেছিলো father কে বাবা বলতে হয় আর শ্বশুরকে আব্বা ডাকতে, এইটা কতটুকু সত্যি জানাবেন।