ডেমরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
দেশনেত্রী খালেদা মুক্তির দাবিসহ ১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অবরোধের প্রথম দিনে রাজধানীর ডেমরায় মিছিল করেছে ডেমরা,যাত্রাবাড়ী ও কদমতলী থানা আংশিক বিএনপি ও অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। মঙ্গলবার সকালে বাদশা মিয়া রোডে বিএনপির এ মিছিলে পুলিশের গাড়ি সামনে পড়লে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় ও ২ টি ককটেল নিক্ষেপ করলে ১ টির বিস্ফোরণ ঘটে। পরে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এসে বিএনপি নেতাকর্মীদের নিক্ষেপ করা দ্বিতীয় ককটেলটির বিষ্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় এ সময় ডেমরা থানার ওসি (তদন্ত) মো. ফারুক মোল্লার ওপর ভাঙ্গা ইট নিক্ষেপ করলে তা ডানপায়ে রক্তাক্ত জখম হয়। একই সঙ্গে রাতের ডিউটি শেষে বাড়ী ফেরার পথে ওই থানার এসআই নাজমুল হাসান ও টহলরত এএসআই শাজাহানকে লাঠি দিয়ে এলোপাথারী পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ ঘটনায় ওসি (তদন্ত) ফারুক মোল্লার পায়ে দু’টি সিলি দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বর্তমানে তারা রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতাল চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে ডেমরা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ডেমরা থানা পুলিশ মিছিলে অংশগ্রহনকারী, ওই পথে চলাচলকারী সন্দেভাজন এলাকাবাসী ও পথচারীসহ ৩২ জনকে আটক করেছে ডেমরা থানা পুলিশ। এদিকে পুলিশের ওপর হামলার ওই ঘটনায় আটক এলাকাবাসী ও পথচারীদের পরিবারের লোকজন ডেমরা থানায় মঙ্গলবার দুপুর থেকেই ভিড় জমাতে থাকে। তবে থানার ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অবরোধ সমর্থনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া—পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে নেতাকর্মীরা হঠাৎ করে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে দু’টি ককটেল নিক্ষেপ করলে সঙ্গে সঙ্গে ১ টি বিস্ফোরণ হয়।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার অপারেশন অফিসার (ইন্সপেক্টর) সুব্রত কুমার পোদ্দার বলেন, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত ৩ পুলিশ সদস্যকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আটকের এ ঘটনায় প্রথমে পর্যন্ত ৩২ জনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডেমরা থানায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় ডেমরা থানায় আটক আইনজীবি সেলিমের স্ত্রী সুরভী আক্তার বলেন, সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আমাদের দুই মেয়েকে মাদ্রাসা থেকে আনতে যায় আমার স্বামী। এ সময় মিছিলে থাকা নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও পিকেটিংয়ের সময় ভয়ে মাদ্রাসার ভেতরে প্রবেশ করে আমার স্বামী। এ সময় সন্দেহ করে পুলিশ আমার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এ দিন প্রকৃতি নামে একটি সামাজিক সংগঠনের সভাপতি ডা. মঞ্জুরুল হককে পিকেঠিংয়ের সময় পুলিশ আটক করেছে। ৩০০ সদস্য বিশিষ্ট এ প্রকৃতি সংগঠনের হাটা ওব্যায়ামের জন্য ক্রয়কৃত জায়গায় তিনি প্রতিদিনের ন্যায় সকালে হাটছিলেন। পিকেটিংয়ের ঘটনায় তাকেও আটক করে পুলিশ।
এ বিষয়ে ডা. মঞ্জুরুলের বড় ভাই ডিএসসিসির ৬৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মাঝহার বলেন, আমার ভাই প্রতিদিন নিজস্ব জায়গায় শরীর চর্চা করে। মঙ্গলবার সকালেও একই কাজ করছিলেন। অথচ থানা পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে আমার ভাই কে আটক করেছে।
এ বিষয়ে ডেমরা থানা ওসি (তদন্ত) মো.ফরুক মোল্লা বলেন, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন, তবে আটকদের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। নির্দোষদের ছেড়ে দেওয়া হবে।