
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর যাত্রাবাড়ি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬৫ নং ওয়ার্ডের কোনাপাড়া ফার্মের মোড় প্রধান সড়কে ডিএনডি ক্যানেল সংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠছে নকশাবহির্ভূত বানিজ্যিক ভবন। ভবনের মালিক সাইফুল ইসলাম খান বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের (বিএনবিসি) তোয়াক্কা না করে বানিজ্যিক ভবনটি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।দি সাইফুল সেন্টার নামে এই বানিজ্যিক ভবনটির হোল্ডিং নং-৭৫, কোনাপাড়া ফার্মের মোড়ে অবস্থিত। ভবনটির নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায়ই হাসপাতাল, শপিং মল, জিমনেসিয়ামসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান ভাড়া নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। জনবহুল আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা এই ভবনটি নির্মাণে রাজউকের ভবন নির্মাণ বিধিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভবনটি প্রধান সড়ক থেকে ক্যানেল দ্বারা বিচ্ছিন্ন,যে কোন অগ্নিদুর্ঘটনা হলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না,সুপ্রশ্বস্ত সিড়ি নেই,বেইজমেন্টে সুপার শপ ভাড়া দিয়ে রেখেছে।তাছাড়া আশে পাশে চতুর্পাশে পর্যাপ্ত জায়গা না ছেড়ে নিজের মতো করে ভবন নির্মাণ করা হলেও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সেদিকে তেমন নজর নেই।এই নিয়ে নির্মাণধীন ঐ ভবনটির আশে পাশের মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। তারা এই বিষয়ে গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে জানান,ভবন মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় যেমনখুশী তেমন করে ভবনটি নির্মাণ করে আসছেন।তারা বলছেন, নির্মাণ ত্রুটি এবং নিয়মবহির্ভূত অবৈধ স্থাপনাটি নির্মাণের কারণে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে। ভবন নির্মাণে ভবন মালিক অনুমোদনের এক ধরনের নকশা পাশ করে ভবন নির্মাণে ভিন্ন রকমের নকশায় কাজ করছেন । তাদের দাবি, এ অনিয়ম প্রকাশ্যে আসা উচিত। পাশাপাশি,ভবন নির্মাণে রাজউকের ভবন নির্মাণ বিধিমালা প্রয়োগে ব্যাবস্থা নেয়া উচিত।
নগরবিদ ও রাজউকরাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) রিভিউয়ের লক্ষ্যে নবগঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম ও ১৫ তম সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন,
নিয়মবহির্ভূত এবং অপরিকল্পিতভাবে আর কাউকে ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।মন্ত্রী আরো বলেন, একটি সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী আবাসিক, বাণিজ্যিক, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, খেলাধুলার মাঠ, ইউটিলিটি সার্ভিস, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং শপিং মলসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রেখে একটি আবাসযোগ্য ও দৃষ্টিনন্দন শহর গড়ে তুলতে কাজ করবে কমিটি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহা-পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মোঃ মাইনুদ্দিন বলেছেন,
দেশজুড়ে নকশাবহির্ভূত ইমারত (দালান) নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। যততত্র গড়ে উঠছে অট্টালিকা। মানা হচ্ছে না উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়ম-নীতিমালা। এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারী ভূমির মালিকরা। আরো বেপরোয়া ডেভেলপার কোম্পানিগুলো। নিয়ম-বহির্ভূত এ কাজে নেপথ্যে থেকে সহায়তা করেন কিছু অসাধু কর্মকর্তা। তাদের পেছনে কিছু অর্থ খরচ করেই বাড়ির মালিক ও নির্মাতারা শাহেনশাহ বনে যান; কারণ কলকাটি নাড়ান ওই অসাধু কর্মকর্তারা। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের তদারকি থাকে নামমাত্র। ফলে, ইচ্ছাধীন ভবন নির্মাণ করায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। নির্মাণ অবস্থায় অনেক ভবন হেলে পড়ছে। কিংবা নির্মাণের পর পরই ধসে পড়ছে কিছু ভবন।
রাজউকের অথোরাইজ অফিসারের কাছে নকশা বহির্ভূত এই ভবনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব এভাবে ভবন নির্মাণ হলে তা অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।